পরীমনির সাথে কী হচ্ছে?

আচমকা নায়িকা পরীমনিকে আটক করা হয়েছে। র্যাব জানায় তারা সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে । মানুষ রাজ,পিয়াসা,মৌ এবং হেলেনা জাহাঙ্গীর গ্রেফতারের সাথে গুলিয়ে ফেলেছে পরীমনির গ্রেফতারের। যার কারণে কোন অপরাধে কে গ্রেফতার হলো তা অনুমান করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যদিও মামলা হওয়ার আগেই পরীকে গ্রেফতার করা হয়। মদের বোতল পাওয়া গেছে। মাদক মামলা হয়েছে পরবর্তীতে। গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছিল মদ ছাড়াও অন্যান্য মাদক পাওয়া গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে সুনির্দিষ্ট করে এই অভিযোগ জানায়নি পুলিশ কিংবা র্যাব!
অন্যদিকে তথাকথিত প্রযোজক রাজ গ্রেফতার হয় পর্নোগ্রাফিতে। কিছু ভুঁইফোঁড় সংবাদ মাধ্যম সেটির সাথেও পরীকে জড়িয়ে ফেলেছে। এর আগে ব্যবসায়ী নাসিরের সাথে পরীর বোট ক্লাব কান্ডকেও এর জন্য দায় দিচ্ছেন অনেকেই।
বলা হয় পরীমনি অনেকের সাথে দুবাই গিয়েছে। কিন্তু কেউ ব্যক্তগতভাবে দুবাই হাজারজনের সাথে গেলে অপরাধের জায়গাটা কোথায়? পরীমনি কী দুবাই থেকে কোন অবৈধ মালামাল দেশে নিয়ে এসেছে? নাকী দেশ থেকে কোন মূল্যবান সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে?
পরীমনি প্রচুর মদ পান করতেন, একথা সত্য। কিন্তু এটা তো অপরাধ হতে পারে না। তার লাইসেন্স ছিল। যদিও পুলিশ বলছে লাইসেন্স মেয়াদউর্ত্তীন্ন। ঠিক আছে, একজন মাদকাসক্তকে নিরাময় কেন্দ্রে নেয়ার কথা। থানায় কেন?

এমন হাজারও প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে। তাদের আশা পরীমনি রহস্য শিগ্রই উন্মোচিত হবে। পরীমনি আইনের দৃষ্টিতে নির্দিষ্ট কোন অপরাধ করলে তার সাজা হবে। কিন্তু নিরপরাধ প্রমাণিত হলে এই হেনস্তার দায় কে নিবে? প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সংশ্লিষ্ট কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হলোঃ

“প্রতিবছর আগস্ট আসে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত মানব ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডের নির্মম শিকার বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সদস্যদের নাম এই মাস জুড়ে আমরা পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করি। রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েও বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের বিচার বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমে করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন।
প্রচলিত আইন তাকে হতাশ করেনি, দীর্ঘ ৩৫ বছর তিনি বিচার পেয়েছেন এবং এখনো বেশ কিছু খুনি অধরা আছে। প্রসঙ্গটি অবতারণা করার কারণ হলো, সাম্প্রতিক চলচ্চিত্রের একজন প্রতিষ্ঠিত নায়িকা পরীমণি ও তাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ঘটনায় সমাজের যে স্থলন ফুটে উঠেছে, অধঃপতিত চেহারা ফুটে উঠেছে তা নারীদের প্রতি নগ্ন পিতৃতান্ত্রিক আগ্রাসনকেই স্পষ্ট করে তুলেছে।” – অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ।। ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সুত্রঃ dhakapost. com

‘আমার সহকর্মীর শারীরিক, মানসিক, ক্যারিয়ার—সব ধরনের সেফটি ও সিকিউরিটি নিয়ে আসলে চিন্তিত। নারী হিসেবে অবশ্যই আরও বেশি চিন্তিত এবং লজ্জিত। এই ভেবে লজ্জিত যে স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও আমাদের বাংলাদেশে নারীর অবস্থান এখনো আসলে এই জায়গায় আছে। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমি আসলে আতঙ্কিত। যে আচরণগুলো তার সঙ্গে করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। সে যদি কোনো অপরাধ করে থাকে, সেটার বিচার হবে। আমরা এখনো কিন্তু জানি না, কোন সুনির্দিষ্ট অপরাধের জন্য পুলিশ পরীমনিকে আটক করেছে। দিনের পর দিন রিমান্ডে নিচ্ছে। যেসব কারণ দেখানো হচ্ছে, সেটাই যদি আসল কারণ হয়ে থাকে, সেটা তো আরও বেশি দুঃখজনক। ওই হিসাব করলে এই প্রোডাক্টগুলো (মদ, এলএসডি) তার বাসা পর্যন্ত কীভাবে এল? কারা সাপ্লাই দিল? অন্যায়টা তো যারা এসব এনে দিয়েছে, তারা আগে করেছে। আগে পেছনের গল্পগুলো জানতে হবে। সেই মানুষগুলোকে ধরতে হবে। আর এভাবে যদি ধরা হয়, বাংলাদেশের কত মানুষকেই ধরতে হবে। তাই আমার কাছে ওই জায়গাটা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ আছে।’’ – আজমেরী হক বাঁধন, সুত্রঃ প্রথম আলো।
“অথচ, বাংলাদেশে ইয়াবার একমাত্র আমদানীকারক বদির বিরুদ্ধে কোন মাদক মামলা নাই, রিমান্ডও নাই।” – সিমিত রায় অন্তর